ঢাকা প্রেসঃ সিলেট জেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসের স্টেনো বাশির উদ্দিন, একই অফিসে সংযুক্তিতে কর্মরত পরিবার পরিকল্পনা সহকারী বরুণ ছত্রী, সিলেট উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসে কর্মরত পরিবার পরিকল্পনা সহকারী চন্দন রায় এবং আঞ্চলিক পণ্যাগারে সংযুক্তিতে কর্মরত পরিবার পরিকল্পনা সহকারী মোঃ মনসুর আহমেদ এর সমন্বয়ে জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগে গড়ে উঠা শক্তিশালী দূর্ণীতি চক্রের বিরুদ্ধে গত বছরের ২৮ মার্চ এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সেখানে তৎকালীন উপপরিচালক জনাব লুৎফুন্নাহার জেসমিনের নেতৃত্বে এই চক্র নিয়োগ, বদলিসহ বিভিন্ন বাণিজ্যের পাশাপাশি সবচেয়ে আলোচিত বিষয় ছিল, কোন ধরণের পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ না করেও ৯ জন পরিবার কল্যাণ সহকারীর নিয়োগ পাওয়া নিয়ে! এ প্রতিবেদন তৈরি করতে গিয়ে দেখা যায়, আজ থেকে প্রায় ৩/৪ বছর আগে পরিবার পরিকল্পনা সহকারী মোঃ মনসুর আহমেদের জেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসের সংযুক্তি আদেশ পরিবার পরিকল্পনা অদিদপ্তর থেকে মারাত্মক অভিযোগের ভিত্তিতে প্রত্যাহার করা হয় এবং তাকে নিজ কর্মস্থল কোম্পানিগঞ্জ উপজেলায় যোগদানের জন্য বলা হয়। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে সকল অপকর্মের মাস্টার মাইন্ড এই আলোচিত কর্মচারী হওয়ায় ১৫ বছরের চাকরি জীবনে কোন দিনও নিজ কর্মস্থলে যেতে হয়নি। লিখিত কোন আদেশ ছাড়াই তিনি জেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসের গুরুত্বপূর্ণ সকল ফাইলের দখল রাখতেন এবং সকলকে এক প্রকার জিম্মি করে নিজের শ্যালিকা/জেঠীসহ সবাইকে ভূয়া নাগরিকত্ব দেখিয়ে সুনামগঞ্জ থেকে সিলেটে এনে চাকরি দিয়ে দেন! সর্বশেষ গত ৮ ডিসেম্বর ২০২২ তারিখে উপ-পরিচালক, পরিবার পরিকল্পনা অফিসের স্মারক নং ৫৯.১১.৯১০০.০১৫.১১.০১৫.২২-৫৬৫ এর মাধ্যমে আয়া পদে নিয়োগ আদেশের ৬ নং ক্রমিকের রোল নং ১৩০৫১০২১৩ এর প্রার্থী জনাব তাছলিমা নাছরিন , পিতা- মোঃ ইব্রাহিম আলী নিজ ঠিকানা দেখান ৫৫ সাগরদিঘীরপাড়, সিলেট ! অথচ খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে এই প্রার্থীর মূল বাড়ি সুনামগঞ্জ জেলা এবং যে ঠিকানা দেখানো হয়েছে তা এক সময় জেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসের ঠিকানা ছিল। মূলত এই প্রার্থী আলোচিত নিয়োগ-বদলী -প্রশিক্ষণ বাণিজ্যের মাস্টার মাইন্ড মনসুর আহমেদের সম্পর্কে আপন শ্যালিকা ! এভাবে ভূঁয়া ঠিকানা ব্যবহার করে বিগত কয়েকটি নিয়োগে তার এবং তার পরিবাররের সকলের চাকরি নিশ্চিত করেছেন ! তবে সকল সিন্ডিকেইট কাজের নিয়ন্ত্রণ জেলা অফিসের স্টেনো বাসির উদ্দিনের হাতে ছিল। ইতোমধ্যে অবশ্য বাসির উদ্দিনকে নাম মাত্র শাস্তি স্বরূপ একই বিভাগের সুনামগঞ্জ জেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসে বদলি করা হয়েছে। কিন্তু, অভিযোগ রয়েছে ঐ কমর্চারী বড় ধরণের শাস্তি এড়াতে তদবির করে সুনামগঞ্জ বদলি হয়েছেন ? কিন্তু বদলি হলেও তার সকল অপকর্মের সহযোগী বিভাগীয় পরিবার পরিকল্পনা অফিসের গাড়ি চালক মানিকের মাধ্যমে সিন্ডিকেট ভিত্তিক অপকর্ম চলমান!
এছাড়াও অভিযোগ ছিল, তৎকালীন সিলেট পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের যাবতীয় প্রশিক্ষণের তালিকা তাদের হাত ধরে হওয়াতে তাদের পছন্দের কর্মচারীগণ সব সময় প্রশিক্ষণের সুযোগ দিতেন। সিলেট জেলার অন্তত ৯ জন পরিবার কলাণ পরিদর্শিকা ও এসএসিএমও অভিযোগ করেন যে, কোন প্রশিক্ষণে নাম দিতে হলে বরুণ ছত্রী ও বাশির উদ্দিনকে এক হাজার টাকা করে চাঁদা দিতে হয় । এছাড়াও ভবিষ্য তহবিল হইতে ঋণ, লাম গ্রান্ট কিংবা পেনশনের ক্ষেত্রে মোটা অংকের চাঁদা দিতে হতো আলোচিত এই সিন্ডিকেটকে। এসকল অপকর্মের সত্যতা মেলায় ইতোমধ্যে তৎকালীন জেলা অফিসের কর্মচারী বরুন ছত্রীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

কিন্তু ঐ সিন্ডিকেট তাদের কাজ অত্যন্ত সুকৌশলে চালিয়ে যাচ্ছে। যার সর্বশেষ ফলাফল হচ্ছে, সিলেটে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগে সবচেয়ে আলোচিত নাম মনসুর আমেদকে আঞ্চলিক পণ্যাগার (সংযুক্ত) থেকে গত ১৮/০৩/২০২৪ খ্রিঃ তারিখের বিভাগীয় পরিচালক, পরিবার পরিকল্পনা, সিলেট জনাব মাজহারুল হক চৌধুরীর অফিসের স্মারক নং ২৩০ এর মাধ্যমে আলোচিত ও বিতর্কিত ঐ কর্মচারীকে বিভাগীয় পরিবার পরিকল্পনা অফিসে সংযুক্তি প্রদান করা হয়েছে! তার এই বদলিতে সিলেটে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের সকল স্তরের কর্মকর্তা/কর্মচালদের মনে আতঙ্কের পাশাপাশি নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে ! নিয়োগ বাণিজ্সযের ্বএকজন ফৌজদারী মামলার ্আসামী কি করে বিভাগীয় পরিচালকের অফিসের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় পদায়ন পায় ! মনে একই প্রশ্ন, ‘ তাহলে কি আবার পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ পূর্বের রাজ্যে ফিরে যাচ্ছে এই পরিচালকের হাত ধরে ? ‘এ ব্যাপারে সিলেট পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের পরিচালক জনাব মাজহারুল হক চৌধুরীর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়।
প্রকাশ : ১৯ মার্চ ২০২৪ খ্রিঃ,ঢাকা প্রেস, বাংলাদেশ ।