পাশাপাশি লেনদেন তলানিতে এসে পৌঁছেছে। এ অবস্থার উত্তরণে নিয়ন্ত্রক সংস্থা মাঝেমধ্যে উদ্যোগ নিলেও, তার কোনো প্রভাব বাজারে দেখা যাচ্ছে না। ফলে আশা-নিরাশার দোলাচলে পড়েছেন পুঁজিবাজারের ৮০ শতাংশ সাধারণ বিনিয়োগকারী। অনেকে এখন বিনিয়োগের খোঁজখবর রাখছেন না।

বাজার-সংশ্লিষ্ট ও বিনিয়োগকারীরা দাবি করছেন, অচল বাজার সচল হওয়ার স্বপ্ন দেখতে দেখতে তারা হতাশ হয়ে পড়েছেন। পুঁজি আটকে প্রতিনিয়ত ধৈর্যের পরীক্ষা দিয়ে যাচ্ছেন তারা। বর্তমান পুঁজিবাজার পরিস্থিতি ২০১০ সালের চেয়েও ভয়াবহ। এ অবস্থায় কী করবেন বুঝে উঠতে পারছেন না। এছাড়া ঋণের বোঝা সইতে সইতে নি:স্ব হয়ে যাচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা।

আজ মতিঝিল এলাকার কয়েকটি ব্রোকারেজ হাউস ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিষ্ঠানগুলো আগের মতো জাঁকজমকপূর্ণ নেই। বিনিয়োগকারীরা না আসায় চেয়ার টেবিল ফাঁকা পড়ে আছে। কর্মীদের হাঁকডাক, ছোটাছুটিও নেই। গুমটভাবে কাটছে তাদের সময়।

এ বিষয়ে ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) সভাপতি রিচার্ড ডি রোজারিও বলেন, মূলত ২০১০ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ব্রোকারেজ হাউসগুলো খারাপ সময় পার করেছে। টিকে থাকার সংগ্রাম করেছে। কোনোমতে চালিয়ে যাচ্ছে। বর্তমান পরিস্থিতি ব্রোকারেজ মালিকদের অবস্থা ভয়াবহ খারাপ অবস্থায় পৌঁছেছে। আশায় থাকতে থাকতে সবার অবস্থা খারাপ হয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, সম্প্রতি শর্তসাপেক্ষে ১৬৯ কোম্পানির শেয়ারের দর কমার সর্বনিম্ন সীমা বা ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করা হয়। যার জন্য লেনদেনের শুরুতে বাজার নেতিবাচক হয়ে পড়ে। এর প্রভাব কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করেও শেষ পর্যন্ত সম্ভব হচ্ছে না। অন্যদিকে বছর শেষ ও প্রান্তিক হিসাব-নিকাশ চলছে। একই সঙ্গে ঋণ পরিশোধের চাপে আছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা, যেজন্য অনেকে মনোযোগী হতে পারছে না। পাশাপাশি বিশ্ব অর্থনৈতিক সমস্যার প্রভাব এবার ভালোভাবে পড়েছে দেশের পুঁজিবাজারে, যা আগে কখনো পড়েনি।

জানা গেছে, আজ ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৯.৪২ পয়েন্ট বা ০.১৫ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ছয় হাজার ১৮০.২৭ পয়েন্টে। ডিএসইর অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ১.৭৭ পয়েন্ট বা ০.১৩ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৩৫২.৩৪ পয়েন্টে। তবে ডিএসই-৩০ সূচক ০.৪৩ পয়েন্ট বা ০.০২ শতাংশ বেড়েছে। ডিএসইতে আজ ২৬৯ কোটি ৫৮ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবস থেকে ৭০ কোটি ৭৮ লাখ টাকা বেশি। আগের কার্যদিবস লেনদেন হয়েছিল ১৯৮ কোটি ৮০ লাখ টাকার।

ডিএসইতে আজ ৩১৩টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার দর বেড়েছে ১৭টির বা ৫.৪৩ শতাংশের, শেয়ার দর কমেছে ১৩৬টির বা ৪৩.৪৫ শতাংশের এবং ১৬০টির বা ৫১.১২ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত রয়েছে।

অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ২৪.৮৩ পয়েন্ট বা ০.১৩ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ২৭৯.০৫ পয়েন্টে। সিএসইতে আজ ১২৮টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১০টির দর বেড়েছে, কমেছে ৪৩টির আর ৭৫টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে ২২ কোটি ৩৫ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।