বুধবার , ৩০ এপ্রিল ২০২৫
সর্বশেষ সংবাদ
শেয়ার বাজার

তিন ইস্যুতে পুঁজিবাজারে আগ্রহ বেড়েছে বিদেশীদের, বড় বিনিয়োগ আসছে

ঢাকা প্রেসঃ পুঁজিবাজারে তিন কারনে বাড়ছে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ। সাধারনত বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে বিনিয়োগের অনুকুল থাকায় বিদেশী বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগে আগ্রহ বাড়াচ্ছেন। এছাড়া অধিকাংশ শেয়ারের দাম যুক্তিকমূল্যের চেয়ে কম দামে শেয়ার কেনাবেচা হওয়ায় দেশের পুঁজিবাজারে ফিরছেন বিদেশি ও প্রবাসী বিনিয়োগকারীরা। এর ফলে বাজারে তাদের অংশগ্রহণ বাড়ছে। তাই পুঁজিবাজারের প্রতি আস্থা বাড়ছে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বলে বাজার বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

এদিকে পুঁজিবাজারে গত মার্চ মাসে বিদেশিদের বিনিয়োগ বেড়েছিল সামান্য। এপ্রিলেও সেই ধারা অব্যাহত ছিল। এপ্রিল মাসে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মোট টার্নওভার ১৮২ কোটি টাকায় পৌঁছেছে, যা আগের মাসে ছিল ৮৭.৫১ কোটি টাকা। অর্থাৎ গত মাস থেকে ১০৮ শতাংশ বেশি বিনিয়োগ বেড়েছে। তাদের দেখে সাইড লাইনে বসে থাকা দেশি বিনিয়োগকারীরাও বিনিয়োগে ফিরছেন।

ফলে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধসহ নানা ইস্যুতে গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে নিষ্কিয় থাকা বিনিয়োগকারীরা ফের সক্রিয় হচ্ছেন। এ কারণে চলতি বছরের এপ্রিল মাসে কিছুটা ইতিবাচক প্রবণতায় দেশের পুঁজিবাজারে লেনদেন হয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, দীর্ঘ সময় ধরে বাজারে অস্থিরতার পরে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা বেড়েছে যে বাজার ঘুরে দাঁড়াবে এবং তারা ভাল রিটার্নের আশায় নতুন বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে।

শীর্ষ ব্রোকার হাউজের এক কর্মকর্তা জানান, বিদেশী বিনিয়োগকারীরা, বিশেষ করে দুবাই-ভিত্তিক বিনিয়োগকারীরা গত মাসে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে প্রচুর পরিমাণে নতুন করে বিনিয়োগ করেছেন। ‘এটি সম্প্রতিক বছরগুলিতে নিয়ন্ত্রক সংস্থার বিদেশিদের বিনিয়োগে আকৃষ্ট করার মত বিভিন্ন উদ্যোগের ফল। বিশেষ করে দুবাইসহ অনেক দেশে রোডশোর ফলাফল বলা যায়। এছাড়াও, বেশিরভাগ তালিকাভুক্ত কোম্পানি এখন সর্বশেষ প্রান্তিকে ভালো আয় করতে পেরেছে। যা বাজার ভালো করার বিষয়ে আরও আশা জাগিয়েছে।’

ডিএসইতে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের টার্নওভারের পরিমাণ ছিল ফেব্রুয়ারিতে ১৯২.৪৬ কোটি টাকা। যা চলতি বছরের জানুয়ারিতে ছিল ১৭৪.৮৪ কোটি টাকা। বিএসইসির একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বলেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থার একাধিকবার বিভিন্ন উদ্যোগের কারণে দেশের পুঁজিবাজার ধীরে ধীরে দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য লাভজনক হয়ে উঠছে। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা এখন বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।

সম্প্রতি বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবায়াত-উল-ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের পুঁজিবাজার এখন অন্যান্য দেশের বাজারের তুলনায় অনেক বেশি স্থিতিশীল। এশিয়ান ফ্রন্টিয়ার ক্যাপিটালের একটি প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২০ সালে ইক্যুইটি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশ থেকে সর্বোচ্চ রিটার্ন পেয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএসইসি চেয়ারম্যান।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর বৈশ্বিক অর্থনীতি এবং বিশ্বব্যাপী সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এখন পুনরুদ্ধার শুরু হয়েছে। স্থানীয় এবং বিদেশী বিনিয়োগকারীরা যারা একসময় সাইডলাইনে ছিলেন, তারা এখন ইক্যুইটিগুলিতে নতুন বিনিয়োগ করা শুরু করেছেন।

এছাড়া তিন কারণে বিদেশিরা বিনিয়োকারীদের বাজারে আগ্রহ বেড়েছে। তার মধ্যে প্রথম কারণ হলো, দেশে টাকার অবমূল্যায়নের পর ডলারে বাজারে অস্থিরতা কমেছে। এখন ডলারের বাজার অনেকটাই স্থিতিশীল।

দ্বিতীয়ত, বাজারে শেয়ারের দাম কম। ভালো ভালো কোম্পানির শেয়ার ফ্লোর প্রাইসে গড়াগড়ি খাচ্ছে। এখন বিনিয়োগ করলেই মুনাফা হবে।
তৃতীয়ত হচ্ছে, টাকার মান কমায় ডলারের বিপরীতে বেশি শেয়ার কিনতে পারছেন বিনিয়োগকারীরা। অর্থাৎ বিদেশিরা যখন দেখছেন মুনাফা তুলে নিয়ে যেতে পারবে তখনই বিনিয়োগ করছে।

ডিএসইর সূত্র মতে, গত এপ্রিল মাসে পুঁজিবাজারে মোট ১৮ কর্মদিবস লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ১২ কর্মদিবস উত্থান আর ৬ কর্মদিবস বাজারে পতন হয়। সবমিলে মাসটিতে ১৮ লাখ ৭০ হাজার বিওধারী (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স) বিনিয়োগকারীরা শেয়ার, মিউচুয়াল ফান্ড এবং বন্ড কেনা-বেচা করেছেন ১০ হাজার ২৯৬ কোটি ২৯ লাখ ৭৮ হাজার ৩৫৪ টাকার।

বিএসইসির তথ্য মতে, ১০ হাজার ২৯৬ কোটি ৭৮ লাখ টাকার মধ্যে দেশি বিনিয়োগকারীরা ১০ হাজার ১১৪ কোটি ৮ লাখ ৪৬ হাজার ৮৪৪ টাকার শেয়ার কেনা-বেচা করেছেন। আর বিদেশি বিনিয়োগকারীরা শেয়ার কেনা-বেচা করেছেন ১৮২ কোটি ২১ লাখ ৩১ হাজার ৫১০ টাকার। মোট কেনা-বেচার তুলনায় এ সংখ্যা নেহায়েত কম হলেও বাজারে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

শেয়ার সংরক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান সিডিবিএলের তথ্য মতে, এপ্রিল মাসের শুরুতে দেশের পুঁজিবাজারে বিদেশি বিওধারীর সংখ্যা ছিল ৬৩ হাজার ৮টি। এই বিনিয়োগকারীরা ১৩১ কোটি ৪২ লাখ ২৭ হাজার ২৪০ টাকার শেয়ার কিনেছেন। তার বিপরীতে শেয়ার বিক্রি করেছেন ৫০ কোটি ৭৯ লাখ ৪ হাজার ২৭১ টাকা।

আলোচিত বিষয় হলো, এক ব্যক্তি এবং দুই প্রতিষ্ঠানের বিও হিসাব থেকে গত ২৭ এপ্রিল ইসলামী ব্যাংক, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ এবং বিডিকমে শেয়ার কেনা হয়েছে ১১৪ কোটি ৩১ লাখ ৪৩ হাজার ৯৮৬ টাকার। আর বাকি ১৭ কর্মদিবসে কিনা হয়েছে মাত্র ১৭ কোটি টাকার শেয়ার। তিন বিনিয়োগকারীর মধ্যে বিটিএ ওয়েলথ এমজিটি লি. নামে বিনিয়োগকারী ইসলামী ব্যাংকের ৩ কোটি ৪২ লাখ ৩১ হাজার ৮৪৪ টি শেয়ার কিনেছেন ১১১ কোটি ৫৯ লাখ ৫৮ হাজার ১১৪ টাকা দিয়ে। অর্থাৎ তিনি নতুন করে এ বিনিয়োগ করেছেন।

একইদিনে নরওয়ের একজন বিনিয়োগকারী অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজের ১ লাখ ৫০ হাজার শেয়ার কিনেছেন ২ কোটি ৬১ লাখ ৪৪ হাজার ৪৭২ টাকা দিয়ে। এছাড়াও নকিব আলম খান নামে একজন বিনিয়োগকারী বিডি অটোকারের ৭ হাজার শেয়ার কিনেছেন ১০ লাখ ৪১ হাজার ৪০০ টাকায়।

বিএসইসির দাবি, শেয়ারের প্রাইস আর্নিং (পিই) রেশিও ভালো, পাশাপাশি বর্তমান বাজার যে অবস্থায় রয়েছে তা থেকে ইনডেক্স আরও বাড়বে। এটি বুঝতে পেরে বিদেশিরা পুঁজিবাজারে শত কোটি টাকা বিনিয়োগ করছে। ১০ মিলিয়ন, ১৫ মিলিয়ন করে বাজারে বিনিয়োগ আসছে। আগামীতে আরও বড় বিনিয়োগ আসবে।

চলতি বছরের এপ্রিল মাসের শুরুতে দেশের পুঁজিবাজারে ৬৩ হাজার ৮টি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিও ছিল। সেখান ১১৪টি বিও কমে মে ৩১ মার্চ দাঁড়িয়েছে ৬২ হাজার ৮৯৪টিতে। ডিএসইতে এপ্রিল মাসে ১০ হাজার ২০০ কোটি টাকার লেনদেনের মধ্যে এ বিনিয়োগকারীরা ১৮২ কোটি টাকার শেয়ার কেনা-বেচা করেছেন। এর মধ্যে ১৩১ কোটি ৪২ লাখ টাকার শেয়ার কিনে বিক্রি করেছেন ৫০ কোটি ৭৯ লাখ ৪ হাজার ২৭১ টাকা।
ঠিক এক বছর আগে, অর্থাৎ ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছিল ১২ হাজার ১০৫ কোটি ১২ লাখ ৮৮ হাজার ৬১২ টাকা।

সে সময় বিদেশিদের শেয়ার কেনা-বেচা বাবদ লেনদেন হয়েছিল ৩০৮ কোটি ৯৪ লাখ ১৫ হাজার ২৭২ টাকা। ৩০৮ কোটি টাকার লেনদেনের মধ্যে গত বছর ৬৪ কোটি ২৮ লাখ ৭৮ হাজার ৪৮৯ টাকার শেয়ার কিনেছেন। তার বিপরীতে বিদেশিরা শেয়ার বিক্রি করেছেন ২৪৪ কোটি ৬৫ লাখ ৩৬ হাজার ৭৮২ টাকার। অর্থাৎ ১৮০ কোটি ৩৬ লাখ ৫৮ হাজার ২৯৩ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।

সে হিসাবে আগের বছরের চেয়ে বিদেশিদের লেনদেন কমেছে ১২৬ কোটি টাকা। আগের বছর যেখানে ১৮০ কোটি টাকা নিট বিনিয়োগ কমেছিল। এ বছর ৮০ কোটি টাকার নিট বিনিয়োগ এসেছে। যা বাজারের জন্য এই মুহূর্তে কিছুটা হলেও স্বস্তি দেবে।

সূত্র মতে, চলতি বছরের মার্চ মাসে বিদেশিদের ৮৭ কোটি ৫১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল। এর মধ্যে শেয়ার কিনেছে ৪৫ কোটি ৪৯ লাখ টাকার, তার বিপরীতে বিক্রি করেছে ৪২ কোটি ১ লাখ ৫৮ হাজার ১৫৭ টাকা। ওই মাসেও নিট বিনিয়োগ এসেছে ৩ কোটি ৪৮ লাখ ৩৬ হাজার ৭৫২ টাকা। সেই ধারাবাহিকতায় এপ্রিলে নিট বিনিয়োগ আর বাড়ল।

দুই-তিনটা কারণে নতুন বিনিয়োগ একেবারে বন্ধ ছিল বলা যায়, এগুলো হচ্ছে করোনাভাইরাস, ফ্লোর প্রাইস আরোপ এরপর ইউক্রেন-রাশিয়া ইস্যু। তার ওপর ডলারের প্রাইসের অস্থিরতাও একটি কারণ ছিল। এখন ডলারের মূল্য মোটামুটি স্থিতিশীল জায়গায় আসছে, এ জন্য বিদেশি বিনিয়োগ আবার নতুন করে আসছে। আশা করছি, পর্যায়ক্রমে বিনিয়োগ বাড়বে।

তবে তার আগের মাস ফেব্রুয়ারিতে বিদেশিদের লেনদেন হয়েছিল ১৯২ কোটি টাকা। তার মধ্যে তারা ৮৯ কোটি ৯৩ লাখ টাকার শেয়ার কিনেছিল। বিপরীতে বিক্রি করেছিল ১০২ কোটি ৪৬ লাখ ৫৯ হাজার ৮৭৬ টাকার শেয়ার। অর্থাৎ ১২ কোটি টাকার নিট বিনিয়োগ নেগেটিভ ছিল। তার আগের মাস অর্থাৎ চলতি বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে বিদেশিরা ১৭৪ কোটি ৮৪ লাখ ২৯ হাজার ৮৩৫ টাকার শেয়ার কেনা বেচা করেছিল। এর মধ্যে ২১ কোটি টাকার শেয়ার কেনার বিপরীতে বিক্রি করেছে ১৩৫ কোটি টাকার শেয়ার। নিট বিনিয়োগ নেগেটিভ ছিল।

২০২২ সালের ডিসেম্বরে বিদেশিরা মোট ১৩৭ কোটি ৬ লাখ ৫ হাজার ১৩৮ টাকার শেয়ার কেনা-বেচা করেছিল। ৩৬ কোটি ১ লাখ টাকার শেয়ার কেনার বিপরীতে ১০১ কোটি ৪ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছিলেন বিদেশিরা। ২০২২ নভেম্বর মাসে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ২৬২ কোটি ৬৩ লাখ ৯৫ হাজার ৩১৬ টাকার শেয়ার কেনা বেচা করেছিল।

তার মধ্যে ১৯১ কোটি ৮৯ লাখ ১৭ হাজার ৮৭৩ টাকার শেয়ার কিনেছে, বিপরীতে বিক্রি করেছেন ৭০ কোটি ৭৪ লাখ ৭৪ হাজার ৪৪২ টাকা। অর্থাৎ সে মাসে নিট বিনিয়োগ ছিল ১২১ কোটি ১৪ লাখ ৪০ হাজার ৪৩১ টাকার। সে হিসেবে চার মাস পর আবার শেয়ার কেনার প্রবণতা বেড়েছে।

Check Also

শেয়ার বাজার

প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বেড়েছে যেসকল বীমা কোম্পানিতে। ২৫ ডিসেম্বর ২০২৩

প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বেড়েছে যেসকল বীমা কোম্পানিতে

bo-account

পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারী বেড়েছে ৪ হাজারের উপর। ৫ ডিসেম্বর ২০২৩

পুঁজিবাজারে বিনিয়েঅগকারী বেড়েছে ৪ হাজারের উপর

বিএসইসি

মেট্রো স্পিনিংয়ের উৎপাদন এক বছর বন্ধ থাকবে। ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩

মেট্রো স্পিনিংয়ের উৎপাদন এক বছর বন্ধ থাকবে। ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩

আর্থিক প্রতিবেদন

সপ্তাহ জুড়ে আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাম করেছে ৩ কোম্পানি।

সপ্তাহ জুড়ে আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাম করেছে ৩ কোম্পানি।

লভ্যাংশ ঘোষণা

তিন কোম্পানির লভ্যাংশ ঘোষণা। ১১ আগস্ট ২০২৩

তিন কোম্পানির লভ্যাংশ ঘোষণা। ১১ আগস্ট ২০২৩

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights