বুধবার , ৩০ এপ্রিল ২০২৫
সর্বশেষ সংবাদ

কেমন হবে করোনা পরবর্তী বাংলাদেশ। প্রকাশ, ৩ এপ্রিল ২০২০

ঘনবসতি, স্বাস্থ্য বিষয়ক সচেতনতা, স্বাস্থ্যসেবায় ভারসাম্যহীন ব্যবস্থা দক্ষিণ এশিয়ার প্রায় সব দেশকেই করোনাভাইরাস মহামারি সবচেয়ে খারাপ ঝুঁকিতে ফেলেছে। এই মহামারি প্রতিরোধে এরই মধ্যে বিভিন্ন দেশ কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে। এতে এ অঞ্চলে অর্থনৈতিক ক্ষতি ব্যাপক হবে। এমন মন্তব্য করেছে ব্রিটেনভিত্তিক বিখ্যাত ইকোনমিস্ট ম্যাগাজিনের ইন্টেলিজেন্স ইউনিট।
এতে বলা হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ার প্রায় সব দেশেই এই ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটেছে। এ অবস্থায় ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট মনে করছে, প্রতিটি দেশই আর্থিক খাতকে বাঁচাতে পদক্ষেপ দেবে। দেবে আর্থিক প্রণোদনা। কিন্তু বিভিন্ন দেশে এই পদক্ষেপ বিভিন্ন রকম হতে পারে।
এ অবস্থায় এ বছর বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হতে পারে সাড়ে ৩ শতাংশ। কিন্তু আগেভাগে এটা সাড়ে ৭ ভাগ প্রত্যাশা করা হয়েছিল। বিশ জুড়ে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ও তাতে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো বসে পড়ার বিষয় নিয়ে বিশ্লেষণ করেছে ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্ট ইউনিট। তাতে বাংলাদেশ সম্পর্কে আরো বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ও ভারত তাদের শক্তিশালী অর্থনৈতিক অবস্থানের কারণে তুলনামূলক বেশি প্রণোদনা সরবরাহ করতে সক্ষম হবে। অন্যদিকে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কায় প্রণোদনার ধরন কিছুটা সীমিত হবে।
এরই মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার সার্কভুক্ত ৮ দেশের শীর্ষ কর্মকর্তারা ভিডিও কনফারেন্সে যোগ দেন। তাতে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় কর্মকৌশল কি হবে তা নির্ধারণ করার কথা। ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্ট ইউনিট বলেছে, দক্ষিণ এশিয়ায় দ্রুতই ছড়িয়ে পড়ছে করোনাভাইরাস। কয়েক দিনে দক্ষিণ এশিয়ায় আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। বিশেষ করে ভারত ও পাকিস্তানে এ হার অনেক বেশি। সরকার প্রকাশিত সংখ্যার চেয়ে প্রকৃত সংখ্যা অনেক বেশি বলে আশঙ্কা রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে পরীক্ষার অভাবে আক্রান্তের সঠিক সংখ্যা বের হয়নি। এক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি উদাহরণ টানা হয়। বলা হয়, গত ২০ মার্চ পর্যন্ত প্রতি ১০ লাখে ১০টি পরীক্ষা করেছে ভারত। একই সময়ে যেখানে ভিয়েতনাম প্রতি ১০ লাখে ১৬০ জনের করোনা পরীক্ষা করেছে। তবে করোনা মোকাবিলায় প্রকৃতিগতভাবেই দক্ষিণ এশিয়া কিছু সুযোগ পেয়েছিল। একটি হলো বিশ্বের সবচেয়ে বেশি তরুণ জনগোষ্ঠী এই অঞ্চলে। এটি পরীক্ষিত যে তরুণদের ওপর এই ভাইরাসের ক্ষতিকারক প্রভাব তুলনামূলক কম। দ্বিতীয়টি হলো এ অঞ্চলের গরম ও আর্দ্র আবহাওয়া, যা এই ভাইরাসের বিস্তারকে বাধা দেয়।
এসব সুবিধার খুব বেশি সদ্ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে না এ অঞ্চলের মানুষের জন্য। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তবে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রায় সব কটি দেশই ঘন জনবসতিপূর্ণ। বর্তমান পরিস্থিতিতে সামাজিক দূরত্ব বাস্তবায়ন করতে হিমশিম খাচ্ছে দেশগুলো। লকডাউন, কারফিউসহ নানা পদক্ষেপেও নিশ্চিত হচ্ছে না সামাজিক দূরত্ব। এর মধ্যে জনগণের স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে সচেতনতার অভাব, নিরাপদ পানির অসম বণ্টন এই ভাইরাস মোকাবিলার পথকে কঠিন করে দিচ্ছে। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এই অঞ্চলে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা যে হু হু করে বাড়বে, এমন আশঙ্কা করতেই হচ্ছে। স্বাস্থ্যসেবা অবকাঠামোয় অপর্যাপ্ত বিনিয়োগ, চিকিৎসকের সংখ্যা কম ও হাসপাতালে প্রয়োজনের তুলনায় একদমই কম শয্যা থাকায় এটা বলাই যায় ভাইরাসের বিস্তার বাড়তে থাকলে, সেই বিপুল পরিমাণ মানুষকে চিকিৎসা দেওয়ার সক্ষমতা হবে না এ অঞ্চলের।
দ্য ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে ভারতে প্রতি ১ হাজার জনের জন্য চিকিৎসক ছিল শূন্য দশমিক ৮ জন। অর্থাৎ, একজনেরও কম। পাকিস্তানে তা শূন্য দশমিক ৯ জন, শ্রীলঙ্কায় ১ দশমিক ১ জন। অন্যদিকে শিল্পোন্নত দেশের জোট জি-৭ ভুক্ত দেশগুলোতে যা ৩ জন। হাসপাতালে ১ হাজার মানুষের জন্য শয্যা রয়েছে ভারতে শূন্য দশমিক ৫টি, পাকিস্তানে শূন্য দশমিক ৬টি, শ্রীলঙ্কায় ৩ দশমিক ৬টি এবং জি৭ ভুক্ত দেশে ৩ দশমিক ৬টি। ভারতে একজন মানুষের জন্য স্বাস্থ্যসেবায় ব্যয় করা হয় ৮৩ ডলার। পাকিস্তানে ৩৩ ডলার, শ্রীলঙ্কায় ১৬১ ডলার। অন্যদিকে জি৭ ভুক্ত দেশে তা ৭ হাজার ২৩০ ডলার। তাই এ পরিস্থিতি নিয়ে এমন একটি প্রাদুর্ভাবের বিষয়ে দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানানো এ অঞ্চলের জন্য কঠিন।
দক্ষিণ এশিয়ায় বিপুল পরিমাণ মানুষ কম মজুরি এবং পরিবারের একটি বড় অংশ তাদের দৈনন্দিন প্রয়োজন মেটানোর জন্য কর্মসংস্থানের ওপর নির্ভরশীল। এ কারণে এ অঞ্চলের কিছু দেশের সরকার যেমন পাকিস্তান সরকার লকডাউন করতে চায়নি। পরে পরিস্থিতির কারণে ভারত ও শ্রীলঙ্কা দেশজুড়ে লকডাউন করেছে। পাকিস্তানের প্রায় সব অঞ্চল অপ্রয়োজনীয় কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ গত ২৬ মার্চ থেকে আংশিক লকডাউন জারি করেছে। এ ছাড়া ইরানের সঙ্গে লাগোয়া সীমান্তের কারণে আফগানিস্তানে এখনো সব খোলাই রয়েছে।
বড় অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে
দ্য ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট আশঙ্কা করছে, করোনাভাইরাস

Check Also

২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব নিলেন সাহাবুদ্দিন।

২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব নিলেন সাহাবুদ্দিন।

রাস্ট্রপতি

গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য রাষ্ট্রপতি হিসেবে যা করণীয় তাই করবো: মো. সাহাবুদ্দিন

গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য রাষ্ট্রপতি হিসেবে যা করণীয় তাই করবো: মো. সাহাবুদ্দিন

সিটি নির্বাচন

পাঁচ সিটিতে নৌকার মাঝি হলেন যারা। ১৫ এপ্রিল ২০২৩

পাঁচ সিটিতে নৌকার মাঝি হলেন যারা

ঈদের ছুটি বাড়ানো হচ্ছে একদিন। ১০ এপ্রিল ২০২৩

ঈদের ছুটি বাড়ানো হচ্ছে একদিন

সিলেট জেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসে শক্তিশালী নিয়োগ,বদলী ও প্রশিক্ষণ বাণিজ্য সিন্ডিকেট, সবকিছুর নেপথ্যে নায়ক জেলা অফিসের একমাত্র কর্মচারী বাসির উদ্দিন!! পর্ব -২

সিলেট জেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসে শক্তিশালী নিয়োগ,বদলী ও প্রশিক্ষণ বাণিজ্য সিন্ডিকেট, সবকিছুর নেপথ্যে নায়ক জেলা অফিসের একমাত্র কর্মচারী বাসির উদ্দিন!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights